অব্যাহত নাব্যতা হ্রাসে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদী ভরাট হয়ে রীতিমত এখন গোচরণ ভুমিতে পরিণত হয়েছে। দ্রুত নদী খননের উদ্যোগ না থাকায় চরম দুর্ভোগে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
উপজেলার পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্র ঘেঁষে বয়ে চলা এক সময়ের শিবসা নদীতে কিছু দিন আগেও নিয়মিত চলতো নৌকা, লঞ্চ, স্টিমারসহ বিভিন্ন নৌযান। খুলনার কয়রা-পাইকগাছা ও বড়দলসহ বিস্তির্ণ অঞ্চলের মানুষ সহজে নৌ পথেই যাতায়াত করতো। জেলা সদর খুলনা থেকে সরাসরি পাইকারি মালামাল আনা-নেয়া হতো নৌপথেই।
অথচ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই শিবসা নদীতে পলিভরাট হয়ে পরিণত হয়েছে সমতল ভূমিতে। বিস্তির্ণ অঞ্চল জুড়ে জেগে ওঠা চরে নতুন ঘাস জন্মে পরিণত হয়েছে গোচারণ ভূমিতে। স্থানীয়রা চরভরাটি জমিতে গবাদি পশু চারনের পাশাপাশি ক্রমশ দখলে নিচ্ছে জেগে ওঠা চরের বিস্তির্ণ এলাকা।
জেগে ওঠা চরে প্রাকৃতিকভাবে গেওয়া,গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জন্ম নেয়ায় অঞ্চলগুলোকে ঘিরে নতুন নতুন গাছের চারা-বীজ বপনের মাধ্যমে বনাঞ্চল গড়ে তুললেও বন্ধ হয়নি দখল প্রক্রিয়া। শিবসার চরভরাটি জমি দখলে নিলেও কারো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন কিংবা দখল হয়ে যাওয়া সরকারী সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে থাকা শিবসা নদী মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপার কিংবা চলাচল করছে। জোয়ারে হাটু পানির দেখা মিললেও ভাটায় নদীর চিহ্ন দেখা মেলা ভার।
নদীতে শহর রক্ষা কোন বাঁধ না থাকায় বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় গোটা এলাকা।পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (এস.ও) রাজু আহম্মেদ জানান, নদী খনন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানের কোন বিকল্প নেই। নদীটি খননের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তিপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, শিববাটী ব্রীজ থেকে হাঁড়িয়া পর্যন্ত শিবসা নদী খননের জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছেন। নদীটি অতিদ্রুত খনন না হলে একেবারেই অস্তিত্ব হারাবে ঐতিহ্যের শিবসা বলে মনে করেন তিনি।খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য ও পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু বলেন, শিবসা খনন এখন পাইকগাছাবাসীর প্রাণের দাবী।
জনপদের জীবন-জীবিকা সচল রাখতে শিবসা খননের বিকল্প নেই বলে জানান। এদিকে শিবসার অব্যাহত নাব্যতা হ্রাস ও দখল প্রক্রিয়ায় বিপাকে রয়েছেন নদী তীরবর্তী বাসীন্দারা। নদী খননের পাশাপাশি দখলদারদের ঠেকাতে প্রশাসনকে সোচ্চার হওয়ার দাবি জানান তারা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।